× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সাটুরিয়ায় সরকারি ঘর বরাদ্দে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ

বাংলারজমিন

সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, শনিবার

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার বরাইদ ইউনিয়নে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে বাসগৃহ বরাদ্দ দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া বারবার তাগাদা দেয়ার পরও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাসগৃহ নির্মাণ কাজ শেষ না করারও অভিযোগ রয়েছে। গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা) কর্মসূচির আওতায় ওই ইউনিয়নে দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৪টি বাসগৃহ বরাদ্দের তিনটিই অসমাপ্ত রয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে বরাইদ ইউনিয়নে মোট চারটি বাসগৃহ বরাদ্দ দেয়া হয়। ১০ ফুট বাই ১০ ফুটের দুটি ঘর, একটি ল্যাট্রিন, একটি রান্নাঘর ও বারান্দাসহ একটি বাসগৃহের নির্মাণ খরচ বাবদ বরাদ্দ হয় ২ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। বাসগৃহ নিতে বরাদ্দপ্রাপ্ত ব্যক্তির কোনো টাকা লাগে না। কিন্তু বরাইদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হারুন আর রশিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তার চাহিদা অনুযায়ী যে টাকা দিতে পেরেছে তাকেই ঘর বরাদ্দ দিয়েছেন।
বরাইদ ইউনিয়নের আগ সাভার গ্রামের আ. সাত্তার কানুর ছেলে মো. শাহিনুর হক একটি বাসগৃহের বরাদ্দ পেয়েছেন। তখন তিনি বিদেশে ছিলেন। এখনো বিদেশে অবস্থান করছেন।
তার স্ত্রী শেফালী আক্তার জানান, চেয়ারম্যানকে নগদ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে স্বামীর নামে ঘরের বরাদ্দ পাওয়া গেছে। কিন্তু অর্ধেক কাজ করে আরো ১০ হাজার টাকা দাবি করেছেন চেয়ারম্যান। টাকা না দিলে কাজ শেষ করবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন। শেফালী আক্তার বলেন, স্বামী বিদেশে থাকলেও সেখানে কোনো কাজ নেই। উল্টো তাকেই টাকা পাঠাতে হয়। দুই সন্তান নিয়ে বর্তমানে বাবার বাড়িতে থাকেন। ঘরের জন্য পঞ্চাশ হাজার টাকা বাবা এবং ভাইদের কাছ থেকে নিয়ে চেয়ারম্যানকে দিয়েছেন। কিন্তু বাকি দশ হাজার টাকা দেয়ার মতো অবস্থা তার নেই।
এদিকে মো. শাহিনুরের বরাদ্দকৃত বাসগৃহ নির্মাণ কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সমাপ্ত করতে না পারায় সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বরাইদ ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে তিন দফায় কারণ দর্শানো নোটিশ দেন। সর্বশেষ নোটিশ দেন গত ৩রা সেপ্টেম্বর। নোটিশের তথ্য অনুযায়ী এ পর্যন্ত তিন কিস্তিতে চেয়ারম্যান মোট ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা উত্তোলন করেছেন। নোটিশে আরো বলা হয়েছে গত ৩০শে জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও তা হয়নি। ফলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর হতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। নোটিশ পাওয়ার তিন কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেয়া হয়। চেয়ারম্যানকে একই রকম নোটিশ দেয়া হয়েছে- বরাদ্দপ্রাপ্ত উত্তর বরাইদ গ্রামের নজরুল ইসলাম, আগ সাভার গ্রামের মোহিরন বেগমের বাসগৃহ নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ার জন্য। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, স্বীকার না করলেও এদের কাছ থেকেও মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করেছেন চেয়ারম্যান।  
গত সোমবার সরজমিনে শাহিনুরের অর্ধসমাপ্ত বাসগৃহে কোনো কাজ করতে দেখা যায়নি। শাহিনুরের স্ত্রী শেফালী আক্তার জানান, বাকি দশ হাজার টাকা না দেয়ায় চেয়ারম্যান তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগই করেনি।
এ ব্যাপারে বরাইদ ইউপি চেয়ারম্যান হারুন আর রশিদ টাকা-পয়সা নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন। নেটিশ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে বলেন, বর্ষার কারণে মাটি না পাওয়ায় কাজ আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। দু’একদিনের মধ্যেই কাজ শুরু হবে।
টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে সাটুরিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শাহরিয়ার মাহমুদ রনজু বলেন, বাসগৃহ বরাদ্দ বাবদ কোনো টাকা-পয়সা লেনদেনের বিষয়টি তার জানা নেই। তবে নির্দিষ্ট সময় কাজ শেষ না হওয়ায় তিন দফায় চেয়ারম্যানকে নোটিশ দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুর আলম বলেন, টাকা-পয়াসা নিয়ে ঘর বরাদ্দের বিষয়ে আমরা কোনো অভিযোগ পাইনি। পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর