করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারির ৯ মাস পার হতে চললো। মহামারির এই পুরো সময়জুড়ে নিজের রূপ বদলেছে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটি। মার্কিন গবেষকরা বলছেন, এখনো ভাইরাসটি বিবর্তিত হচ্ছে। তাদের ধারণা, বিবর্তিত হয়ে আরো সংক্রামক হয়ে উঠছে ভাইরাসটি। এ খবর দিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।
খবরে বলা হয়, নতুন মার্কিন গবেষণায় করোনাভাইরাসের ৫ হাজার জিনেটিক সিকুয়েন্স বিশ্লেষণ করা হয়েছে। বিশ্বজুড়ে ভাইরাসটি যত ছড়িয়েছে ততই এর বিবর্তন হয়েছে। পাল্টেছে রূপ। তবে গবেষকরা এটা নিশ্চিত করতে পারেনি, এই বিবর্তনের কারণে এটি আরো বেশি প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে কিনা বা এর প্রভাব পাল্টেছে কিনা।
তবে তারা জানিয়েছেন, ভাইরাসটি আগের চেয়ে আরো বেশি সংক্রামক হয়ে উঠতে পারে। এ গবেষণা নিয়ে সর্বপ্রথম প্রতিবেদন প্রকাশ করে ওয়াশিংটন পোস্ট। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ভাইরাসটির বিবর্তন সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছেন। তবে এর পরিবর্তনগুলো নগণ্য।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব এলার্জি অ্যান্ড ইনফেকশিয়াস ডিজিসেস এর ভাইরোলজিস্ট ড্যাভিড মরেনস বলেন, নতুন গবেষণাটি অতিমাত্রায় গুরুত্ব দেয়ার কিছু নেই। তিনি বলেন, তবে ভাইরাসটি সামাজিক দূরত্ব বজায়ের মতো স্বাস্থ্যবিধিগুলোয় প্রভাবিত হচ্ছে।
মরেনস বলেন, এসব স্বাস্থ্যবিধি ভাইরাসটির বিস্তার বা সংক্রমণের জন্য প্রতিবন্ধকতা। ভাইরাসটি এসব প্রতিবন্ধকতা এড়িয়ে ছড়িয়ে পড়তে শিখছে। তিনি বলেন, এর মানে এমনটা হতে পারে যে, কোনো কার্যকরী টিকা আবিষ্কারের পরও ভাইরাসটি বিবর্তিত হতে পারে। ওই টিকায় পরিবর্তন আনতে হতে পারে, যেমনটা প্রতি বছর ফ্লু’র টিকার ক্ষেত্রে করতে হয়।
এদিকে, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে করোনা সংক্রমণের হার ফের বাড়ছে। গত দুই সপ্তাহে ২০ রাজ্যে সংক্রমণ বেড়েছে ৫ শতাংশের বেশি। এখন অবধি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি করোনা সংক্রমণ ও করোনা সংশ্লিষ্ট মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। জন হপকিন্সের উপাত্ত অনুসারে, এখন অবধি দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৭০ লাখ মানুষ। মারা গেছেন ২ লাখের বেশি।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন সংক্রমণের বেশিরভাগই দেখা যাচ্ছে তরুণদের মধ্যে। সেন্টারস ফর ডিজিস কনট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) পরিচালক ড. রবার্ট রেডফিল্ড গত বুধবার কংগ্রেসের এক শুনানিতে বলেন, নতুন সংক্রমণের ২৫ শতাংশই হয়েছে ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সীদের মধ্যে।