হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব এ বছর অনাড়ম্বরভাবে অনুষ্ঠিত হবে। করোনা সংক্রমণ এড়াতে এবার পূজার অনুষ্ঠানমালা শুধু ধর্মীয় রীতিনীতি অনুসরণ করে পূজা-অর্চনার মাধ্যমে মন্দির প্রাঙ্গণেই সীমাবদ্ধ থাকবে। এবার খুলনায় ৯৭৮টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে খুলনা ৯ উপজেলায় ৮৪২টি মণ্ডপে ও খুলনা মহানগরীতে ১৩৬টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
খুলনার উল্লেখযোগ্য মণ্ডপগুলো- দোলখোলা, শিববাড়ী, শীতলাবাড়ি, তালতলা আর্য্য কালি মন্দির, পঞ্চবীথি, আর্য্য ধর্মসভা, বড়বাজার, কয়লাঘাট কালিবাড়ি, ওমানন্দ শিবমন্দির, মহেশ্বরপাশা বণিকপাড়া, সাহেবের কবরখানা, রূপসা উপজেলার দুর্জনীমহল, আইচগাতি, পিঠাভোগ, বটিয়াঘাটা উপজেলার নারায়ণপুরের মহানামা যজ্ঞাস্থলী গোপাল বাড়ি, শৈলমারী, ঝড়ভাঙ্গা, হোগলাডাঙ্গা, জলমা, ডুমুরিয়া উপজেলার আন্দুলিয়া মণ্ডপ, চুকনগর মালো পাড়া, খর্ণিয়া বাজার, দাকোপ উপজেলার চালনা বাজার, বউমার গাছতলা, লাউডোব, পোদ্দারগঞ্জ, লক্ষ্মীখোলা, পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি মিলনমন্দির, পাইকগাছা বাজার, তেরখাদা উপজেলার আমতলা উত্তরপাড়া, দিঘলিয়া উপজেলার মাঝিরগাতি হাইস্কুল, গাজিরহাট, ফুলতলা বাজার বণিক সমিতি, জামিরা বাজার, মাতৃসেবা, দামোদর গাছতলা ও কয়রা উপজেলার আমাদি বাজার, চান্নিরচক, সুরখালী, মহেশ্বরীপুর, ভাগবা ও খড়িয়া। নারায়ণপুরের মহানামা যজ্ঞাস্থলী গোপাল বাড়ির পূজা মণ্ডপ। প্রায় সব মন্দিরে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ, চলছে রং-তুলির আঁচড়।
বটিয়াঘাটার নারায়ণপুরের মহানামা যজ্ঞাস্থলী গোপালবাড়ি মণ্ডপের পূজার আয়োজক খুলনার বিশিষ্ট শিল্পপতি ও তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা শ্রীমন্ত অধিকারী রাহুল বলেন, প্রতিমা আর মণ্ডপে নান্দনিকতা ফুটে উঠেছে। রং-তুলির আঁচড়ের কাজও শেষ হয়েছে।
পূজাকে ঘিরে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে গোপাল বাড়ির মণ্ডপে। তিনি বলেন, করোনা মহামারিকালে এ বছর পূজার অনুষ্ঠানমালা শুধু ধর্মীয় রীতিনীতি অনুসরণ করে পূজা অর্চনার মাধ্যমে মন্দির প্রাঙ্গণেই সীমাবদ্ধ থাকবে।
পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতারা জানিয়েছেন, করোনা মহামারির কারণে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা শুধু মন্দির প্রাঙ্গণেই সীমাবদ্ধ থাকবে। আলোকসজ্জা, মেলা, আরতি প্রতিযোগিতা ও কোনো ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হবে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে মন্দির প্রাঙ্গণে পূজা অনুষ্ঠান ও সব আচারবিধি পালন করা হবে।
পূজা উদ্যাপন পরিষদ, খুলনা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত কুমার কু-ু বলেন, খুলনা মহানগরীর আট থানায় ১৩৬টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। দুর্গাপূজায় আলোকসজ্জা, মেলা, আরতি প্রতিযোগিতা ও কোনো ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হবে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে মন্দির প্রাঙ্গণে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ খুলনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রবিন কুমার দত্ত বলেন, এ বছর খুলনা জেলার ৯ উপজেলায় ৮৪২টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে সবার আর্থিক অবস্থাও ভালো না। এ ছাড়া খুলনার কয়রা, দাকোপ ও পাইকগাছায় ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় সেখানের মানুষের আর্থিক অবস্থা শোচনীয়। সে কারণে সরকারের অনুদানের ওপর এবারের পূজা অনেকটা নির্ভর করছে।