কিশোরগঞ্জে সহায়-সম্পদ জবরদখল হওয়া এবং জীবন রক্ষার আকুতি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মোছা. জিন্নাত আরা ও আফরিন সুলতানা আফিয়া নামে অসহায় ও বিধবা দুই নারী। তারা সম্পর্কে বউ-শাশুড়ি। স্বামী-সন্তানহারা মোছা. জিন্নাত আরা তার একমাত্র মেয়ে নাজমা বেগম ও মেয়ের জামাই আমিনুল ইসলাম আশফাকের বিরুদ্ধে পারিবারিক সহায়-সম্পদ জবরদখল করার অভিযোগ এনে প্রতিকার দাবি করেছেন। এছাড়া পুত্রবধূ আফরিন সুলতানা আফিয়া এবং তিন নাতি-নাতনী নাসির উদ্দিন সজাগ (১০), ইউশা আক্তার নাভা (৮) ও নিশাদ মোয়াবিহা তাইয়্যেবা (৫) সহ নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়েছেন এই বৃদ্ধা। মোছা. জিন্নাত আরা কিশোরগঞ্জ পৌরসভার সাবেক কমিশনার মৃত মো. গিয়াস উদ্দিনের স্ত্রী। গতকাল সকালে শহরের পুরান থানা এলাকার সোহাগ টাওয়ারে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে মোছা. জিন্নাত আরা জানান, তার তিন সন্তানের মধ্যে মেয়ে নাজমা বেগম সবার বড়। এরপর দুই ছেলে সোহাগ ও সুজন।
২০০৮ সালের ৫ই ডিসেম্বর বড় ছেলে সোহাগ মারা যাওয়ার দেড় বছরের ব্যবধানে গত ৮ই জুলাই ছোট ছেলে সুজন মারা যায়। ছোট ছেলে সুজন ফিসারির ব্যবসা, ডিশের ব্যবসাসহ বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত ছিল। সে মারা যাওয়ার পর তাদের পারিবারিক সহায়-সম্পদ এবং ব্যবসা জবরদখলে নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে মেয়ে নাজমা ও তার স্বামী আশফাক। সুজনের মৃত্যুর মাত্র তিনদিন পর তারা ফিসারী দখল করে মাছ ছাড়ে এবং সুজনের ডিশের ব্যবসা ও দোকান সবকিছু তাদের বুঝিয়ে দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। জিন্নাত আরা ও সুজনের সদ্য বিধবা স্ত্রী আফরিন সুলতানা আফিয়া এতে অস্বীকৃতি জানালে তারা পরিবারের সবাইকে ঘরের ভেতরে রেখে বাইরে তালা ঝুলিয়ে দেয়। জিন্নাত আরা ও পরিবারের সদস্যদের চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে গেলেও কেউ তালা খুলে দিতে সাহস পায়নি। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে।
পরবর্তীতে সুজনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আলমারিতে রাখা সমস্ত দলিলপত্র আশফাক তালা ভেঙে নিয়ে গেলে এ ব্যাপারে মোছা. জিন্নাত আরা কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। থানা থেকে দলিলপত্র ফেরত দেয়ার কথা বললেও এখনো পর্যন্ত সে সব ফেরত দেয়নি। মোছা. জিন্নাত আরার অভিযোগ, মেয়ে নাজমা বেগমের ওয়ারিশ সূত্রে পাওনা সম্পূর্ণ তিনি বুঝিয়ে দিতে চাইলেও তারা অন্যায়ভাবে পারিবারিক সহায়-সম্পদ এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান জোর করে দখল করার চেষ্টা করছে। প্রাণনাশের আশঙ্কায় তারা এখন চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে মোছা. জিন্নাত আরা ও আফরিন সুলতানা আফিয়া ছাড়াও আফরিন সুলতানা আফিয়ার তিন শিশু সন্তান নাসির উদ্দিন সজাগ, ইউশা আক্তার নাভা ও নিশাদ মোয়াবিহা তাইয়্যেবা উপস্থিত ছিল।
এ ব্যাপারে আমিনুল ইসলাম আশফাকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগকে ভিত্তিহীন দাবি করে বলেন, কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তির প্ররোচণায় আমার বিরুদ্ধে এসব মিথ্যা রটনা করা হচ্ছে। এসব স্বার্থান্বেষী ব্যক্তিরা নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য তাদের পথের কাঁটা ভেবে আমাকে টার্গেট করেছে। এমনকি তারা নিজেরা ঘরে তালা ঝুলিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ পর্যন্ত এনেছে। এসবের মাধ্যমে তারা আমার সম্মানহানি ও সামাজিকভাবে হেয় করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে।