সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবিতে প্রতীকী লাশ ঘারে করে ঢাকা থেকে পায়ে হেঁটে একক পদযাত্রায় সীমান্তবর্তী কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী থেকে যাত্রা শেষ করেছেন হানিফ বাংলােেদশি। বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নাগেশ্বরী পৌরসভার প্রতীক মুক্তমঞ্চে পথসভার মাধ্যমে পদযাত্রা সমাপ্তি ঘোষণা করেন তিনি। এ সময় বক্তব্য রাখেন হানিফ বাংলাদেশি, ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম, মা জাহানারা বেগম প্রমুখ।
হানিফ তার বক্তব্যে জানায় ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি অনন্তপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে প্রাণ হারান বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী। হত্যার ৯ বছর অতিবাহিত হলেও বিচার পায়নি ফেলানীর পরিবার। অনতি বিলম্বে ফেলানী হত্যার বিচার দাবি করেন হানিফ বাংলাদেশি। তিনি আরও বলেন, সীমান্তে বছরের পর বছর ভারতীয় বিএসএফ পাখির মতো গুলি করে মেরে ফেলে বাংলাদেশি নাগরিককে। অথচ এ যাবত কারও কোনো বিচার হয়নি। ভারতীয় কোনো নাগরিক বাংলাদেশে আটক হলে পতাকা বৈঠকের মাধমে তাকে ছেড়ে নেয়া হয়।
কিন্তু বাংলাদেশি নাগরিকের ক্ষেত্রে তা হয়না। হানিফ আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারত প্রতিবেশী ও বন্ধুপ্রতিম দেশ। বাংলাদেশ ভারতের কাছে মানবিক আচরণ প্রত্যাশা করে। কিন্তু বিএসএফ মাঝে মাঝেই বাংলাদেশিদের গুলি করে হত্যা করে। কেউ চোরাকারবারি হলে আইনের আওতায় বিচার করা যেতে পারে। কিন্তু সীমান্তে গুলি করে হত্যা মানবতার চরম লঙ্ঘন।’
ফেলানির বাড়ি পর্যন্ত যেতে না পারার ব্যাপারে বলেন, আমার খুব ইচ্ছে ছিলো বোন ফেলানির বাড়িতে যাবো। তার বাবা মায়ের সাথে দেখা করব কথা বলব। কিন্ত তা হলো না। তবে যেহেতু উপজেলা সদরে এসে ফেলানির বাবা মায়ের সাথে দেখা হলো সেহেতু আমার নিরাপত্তার কারণে আমি এখান থেকেই আমার পদযাত্রা শেষ করলাম।
এদিকে ফেলানী হত্যার ৯ বছর অতিক্রম হলেও বিচার না পেয়ে হতাশ ফেলানির পরিবার। তার বাবা মায়ের দাবি দ্রুত তাদের মেয়ে হত্যার বিচার করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা হোক।
হানিফের বাড়ি নোয়াখালীর সুধারাম উপজেলার নিয়াজপুর ইউনিয়নের জাহানাবাদ গ্রামে। নোয়াখালী বুলুয়া ডিগ্রি কলেজ থেকে ১৯৯৯ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন তিনি।
এ ব্যাপারে সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব ওমর ফারুক বলেন সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তবাহিনীর গুলিতে অনেক লোক মারা যাচ্ছে। সাংবিধানিকভাবে এ হত্যাকান্ডের বিচার হওয়া দরকার।
নাগেশ্বরী নাগরিক কমিটির সভাপতি রবিউল ইসলাম খাঁন রবি বলেন, সীমান্তে বিচার বহির্ভূত হত্যা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এ হত্যা বন্ধা করা উচিত। ভারতীয় সরকার এবং বাংলাদেশি সরকার প্রাতিষ্ঠানিকভাবে জোরালো পদক্ষেপ নেয়া উচিৎ। তবে এ হত্যা বন্ধ হবে। আমি সীমান্তের এই হত্যাকান্ড বন্ধে জোর দাবি জানাচ্ছি।