× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ভ্যাকসিন: প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা

শেষের পাতা

ডা. জিয়াউদ্দিন হায়দার
১ অক্টোবর ২০২০, বৃহস্পতিবার

বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশসহ অপেক্ষাকৃত দরিদ্র দেশগুলোর বেশির ভাগ মানুষের কাছে করোনা-ভাইরাসের ভ্যাকসিন সেবা পৌঁছে দেয়ার জন্য ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি প্রস্তাবনা তৈরি করেছে। এই প্রস্তাবনাটি আগামী মাস অর্থাৎ অক্টোবরের প্রথম দিকে সংস্থাটির সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরামে (বোর্ড অব এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টরস) অনুমোদনের জন্য দাখিল করা হবে। গত মঙ্গলবার বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড মালপাস আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা দেন। এই জরুরি ভ্যাকসিন তহবিল থেকে দরিদ্র এবং মধ্যম আয়ের দেশগুলো অর্থ সাহায্য পাবে যাতে করে অর্থনৈতিক দুর্বলতার কারণে কোনো দেশ করোনা ভ্যাকসিন থেকে বঞ্চিত না হয়। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যকর্মীসহ অন্য যেকোনো প্রয়োজনীয় জনগোষ্ঠী ভ্যাকসিনের আওতা থেকে বাইরে না থাকে।

ভ্যাকসিন পাওয়ার জন্য বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা আরো অনেক আগেই শুরু হয়েছে। ধনী দেশগুলো ভ্যাকসিন বাজারজাতকরণের বহু আগেই তাদের চাহিদা পূরণের জন্য আগাম অর্থায়ন করে রেখেছে। শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই পৃথিবীর বড় বড় তিনটি ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান থেকে লাখ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাওয়ার আশায় ৩ বিলিয়ন ডলার আগাম লগ্নি করার ঘোষণা দিয়েছে। সেই কারণে বিশ্ব ব্যাংকের এই ১২ বিলিয়ন ডলারের করোনা ভ্যাকসিন তহবিল দরিদ্র এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোকেও এই বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় সমভাবে টিকে থাকতে সাহায্য করবে।
কিন্তু এই বৈশ্বিক তহবিল থেকে অর্থ পেতে হলে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশকেও এখনই তৎপর হতে হবে। প্রথমেই যেটা করতে হবে সেটা হলো, এই অর্থ পাওয়ার জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করা এবং সেটা এই মুহূর্তেই দরকার। তার সঙ্গে থাকতে হবে করোনাভ্যাকসিন অর্থায়ন, ক্রয়, বিতরণসহ একটি সুনির্দিষ্ট অ্যাকশন প্ল্যান। সমগ্র জনগোষ্ঠীর কোনো কোনো অংশকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রথম ধাপে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে, কীভাবে কাঙ্ক্ষিত জনগোষ্ঠীর কাছে ভ্যাকসিন নিয়ে পৌঁছানো যাবে, ভ্যাকসিন ক্রয় এবং বিতরণে সর্বমোট কত টাকা খরচ হবে, জাতীয়ভাবে কত টাকা অর্থায়ন করা যাবে, বাড়তি অর্থের চাহিদা কত, বিশ্ব ব্যাংকের এই ১২ বিলিয়ন ডলার তহবিল থেকে কত টাকা নেয়ার প্রয়োজন আছে ইত্যাদি, ইত্যাদি। এই জরুরি কাজগুলো এখনই দক্ষতার সঙ্গে না করলে ভ্যাকসিন সংগ্রহের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পিছিয়ে যাবে।
বিভিন্ন কারণে ঈঙঠওউ-১৯ নিয়ন্ত্রণ এবং চিকিৎসায় আমাদের দেশের সীমাহীন দুর্বলতা লক্ষ্য করা গেছে। এখনো ওই দুর্বলতাগুলো আমাদের সাধারণ নাগরিকদের স্বাভাবিক স্বাস্থ্য সেবা পাওয়ার পথে বড় অন্তরায় হয়ে আছে। স্বাস্থ্য খাতের ক্রয়ে দুর্নীতি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে সবার নজর কেড়েছে। আমরা কেউই ওইসব দুঃস্বপ্নের পুনরাবৃত্তি দেখতে চাই না। আশা করি, করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে আমাদের স্বাস্থ্য খাতের মহারথীরা নতুন কোনো দুঃস্বপ্নের জন্ম দেবেন না।
[লেখক: বিশ্ব ব্যাংকের স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জনসংখ্যা বিষয়ক কর্মকর্তা।]
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর