× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

রয়টার্সের রিপোর্ট / বসনিয়ার জঙ্গলে জঙ্গলে ঘুরছে বাংলাদেশিসহ শ’ শ’ অভিবাসী

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(৩ বছর আগে) অক্টোবর ১, ২০২০, বৃহস্পতিবার, ১১:৪০ পূর্বাহ্ন

ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে প্রবেশের সুযোগের আশায় ক্রোয়েশিয়া-বসনিয়া সীমান্তের কাছে পরিত্যক্ত কারখানা ও জঙ্গলের ভেতর আশ্রয় নিয়েছে শ' শ' অভিবাসী। এদের মধ্যে রয়েছেন অনেক বাংলাদেশিও। ইউরোপের হিমশীতল তীব্র ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় তাদের পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
খবরে বলা হয়, বুধবার শীতের সকালে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মরক্কো ও আলজেরিয়ার অভিবাসীদের নিজেদের অস্থায়ী তাঁবুতে জবুথবু অবস্থায় কাঁপতে দেখা যায়। বসনিয়ার ভেলিকা ক্লাদুসা শহরের উল্টো দিকে উঁচু পাহাড়ের ঘন জঙ্গল এখন তাদের আশ্রয়। কার্ডবোর্ড, গাছের শাখাপ্রশাখা আর নাইলনের শিটে তারা তাঁবু তৈরি করে নিয়েছেন। পাশেই কেউ কেউ আগুন ধরিয়ে বসেছেন।
কেউ আবার দু' মুঠো রান্না করছেন। বনের তীব্র ঠাণ্ডায় অনেকে আবার কাপড় ধুচ্ছেন বা গোসল সেরে নিচ্ছেন। দাঁত মাজছেন আগুনে পোড়া কাঠের ছাই দিয়ে।
অকার্যকর অভিবাসী নীতি ঠিক করতে ইইউ যখন ব্যস্ত, তখন এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা থেকে পালিয়ে যাওয়া হাজার হাজার মানুষ ধনাঢ্য এই মহাদেশের আনাচে কানাচে পড়ে আছে। অনেকে চেষ্টা করছে ঢুকার, কিন্তু ব্যর্থ হচ্ছে।
২০১৫-১৬ সালে ইউরোপের অভিবাসী সংকটের সময় বলকান পাড়ি দিয়ে অনেকে ইউরোপে ঢুকেছেন। তবে তখনও দরিদ্রতর বসনিয়াকে অভিবাসীরা এড়িয়েই গেছেন। কিন্তু ইউরোপ তাদের প্রায় সকল সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার পর বসনিয়া হয়ে উঠেছে গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট রুট।
বাংলাদেশ থেকে যাওয়া মাহমুদ আবুল বলেন, 'এখানে সমস্যার অন্ত নেই। কোনো রুম নেই, পানি নেই, স্বাস্থ্য সুবিধা নেই, নেই পরিচ্ছন্নতার বালাই।' বসনিয়ার বিহাক ও ভেলিকা ক্লাদুসা শহরে এই অভিবাসীরা প্রথমে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তবে শিগগিরই কর্তৃপক্ষ ৫০০ জনের ওই বহরকে আর আশ্রয়ে রাখতে অস্বীকৃতি জানায়। অভিবাসীদের জন্য খোলা অভ্যর্থনা কেন্দ্র বন্ধ করতে যাচ্ছে শহরের কর্তৃপক্ষ।
প্রথম প্রথম বসনিয়ানরা সাদরেই এই অভিবাসীদের আশ্রয় দিয়েছিল। নব্বইয়ের দশকে যুদ্ধের তীব্রতায় বসনিয়ানরা নিজেরাই পালিয়ে বেড়িয়েছেন বিশ্বের দেশে দেশে। তাই এই অভিবাসীদের সংগ্রামের প্রতি তাদের সহানুভূতিই ছিল। কিন্তু শিগগিরই দুশ্চিন্তায় পড়ে সীমান্ত এলাকার জনগণ, কারণ চাপ তাদের ওপরই বেশি এসেছে। এরপর দাবি ওঠে, অন্যান্য অঞ্চলকেও চাপ ভাগাভাগি করে নিতে হবে। তবে জাতিগতভাবে বৈচিত্র্যময় বসনিয়ায়, সার্ব ও ক্রোয়েট অধ্যুষিত অঞ্চলগুলো শরণার্থীদের গ্রহণে সোজাসাফটা অস্বীকৃতি জানায়। এই কারণেই অভিবাসীরা এতদিন বসনিয়াক-অধ্যুষিত সারাজেভো ও ক্রাজিনা অঞ্চলে ছিলেন।
বেশিরভাগ অভিবাসীই রাবারের নৌকায় করে দ্রিনা নদী পার হয়ে বসনিয়ায় ঢুকেছেন। এই কথা জানিয়েছেন বসনিয়ার সীমান্ত পুলিশ কর্মকর্তা আজুর স্লিজিভিক। তিনি আরও বলেন, 'এদের অনেকেই ডুবে গেছেন। কারণ স্রোতস্বিনী দ্রিনা নদীর মেজাজ আগে থেকে ঠাওর করা মুশকিল।'
কিন্তু তারপরও হাল ছাড়েনি অভিবাসীরা। মঙ্গলবার রাতে প্রায় ৫০ জন অভিবাসী বনে স্থাপিত তাঁবু ছেড়ে ক্রোয়েশিয়ান সীমান্তের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। চেষ্টা করবেন সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ঢুকে পড়া যায় কিনা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে। যাওয়ার সময় একজন আনন্দের আতিশয্যে বলে উঠলেন, 'ইতালি, শিগগির দেখা হচ্ছে!'
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর