জাকির হোসেন নামে এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মৃত্যুবরণ করেছে। নিহতের গ্রামের বাড়ি নবাবগঞ্জ উপজেলার নয়নশ্রী ইউনিয়নের চর শৈল্যা গ্রামে। নিহতের স্বজনেরা জানান, গত বুধবার নিহত যুবককে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি ফোন করে ডেকে নেয় দুর্বৃত্তরা। এরপর পাশের এলাকা থেকে অজ্ঞান অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়। পরিবারের লোকজন চিকিৎসার জন্য নবাবগঞ্জে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। হাসপাতালের চিকিৎসক তার অবস্থার বেগতিক দেখে দ্রুত মিটফোর্ড হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। এরপর মিটফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসা অবস্থায় গতকাল সকালে মৃত্যুবরণ করেন জাকির।
এ ব্যাপারে কোতোয়ালি থানার এসআই কিরণ জানান, জাকিরের মৃত্যুটি রহস্যজনক মনে হচ্ছে। নিহতের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে চিকিৎসাপত্র দেখে মনে হচ্ছে পয়জনজনিত কারণে তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। মৃত্যুর কারণ জানতে পোস্ট মর্টেম করতে দেয়া হয়েছে। পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট পেলেই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
নিহতের স্ত্রী বলেন, আমার স্বামী প্রতিদিনের মতো গত বুধবার মোটরসাইকেল নিয়ে বের হন। কার যেন ফোন পেয়ে বাসা থেকে বের হন। বিকালে জানতে পারি আমার স্বামী জাকির খেজুরবাগ বালুর মাঠে পড়ে আছে। অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করালে গতকাল মৃত্যুবরন করেন। আমার স্বামীর মৃত্যু আমার কাছে স্বাভাবিক মনে হচ্ছে না। পুলিশ তদন্ত করলে এর রহস্য বের হয়ে যাবে। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই।
এ ব্যাপারে নবাবগঞ্জ থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম শেখ বলেন, ঘটনার তদন্তে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্তে কিছু পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নিহতের পিতা ও স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, নিহত জাকিরকে পরিকল্পিতভাবে ফোন করে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের পিতা জানান, গত বুধবার দুপুরে আমার ছেলেকে ফোন দিয়ে ডেকে নিয়ে যায়। পরে বিকালে ওই ওয়ার্ডের মেম্বার আমাকে জানান, জাকির অসুস্থ অবস্থায় শফিকুলের বাড়িতে পড়ে আছে। আমি গিয়ে জাকিরকে শফিকের ঘরের সামনে পড়ে থাকতে দেখতে পাই। আরো দেখতে পাই তার শরীরে বালু মাখানো ছিল। পরে শফিকুলের বোন ঘরের দরজা খুলে জাকিরের শার্ট এবং মোটরসাইকেলের চাবি দেয় আমাকে।
স্থানীয় লোকদের কাছ থেকে জানা যায়, জাকির দীর্ঘ বছর ধরে মোটরসাইকেলে ভাড়ায় যাত্রী আনা নেয়া করতো। কি কারণে তাকে এইভাবে পরিকল্পিত হত্যা করা হলো সেই প্রশ্ন এখন সবার মুখে মুখে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা জানায়, এই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে চিহ্নিত এক যুবক মাদক ব্যবসা ও সেবন করে আসছেন। থানায় তার বিরুদ্ধে মাদক মামলাসহ একাধিক মারামারির মামলা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে ভয়ে কেউ কিছু বলতে সাহস পায় না। এ ঘটনায় স্থানীয় লোকজন ও নিহতের পরিবার সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান।